ফুচকা বিক্রি ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে রাজি নন পীযূষ। তাই আনলক হওয়ার পরই অল্প কিছু ফুচকা বানিয়ে বারাসতের পায়োনিয়ার পার্ক এলাকায় গিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় ক্রেতা হয়নি একদমই। ফলে ব্যবসা বন্ধ রাখতে হয়েছে তাঁকে।
কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্র নন পীযূষ। করোনা নিয়ে উদ্বেগ আর আতঙ্কের মধ্যেও ফুচকা বিক্রিই করতে চান তিনি। তাই কিছু নতুন নিয়ম জারি করেছেন নিজের ব্যবসায়। নিজেকে এবং ক্রেতাদের সুরক্ষিত রাখতে স্যানিটাইজার, মাস্ক মাস্ট তাঁর স্টলে। একসঙ্গে বেশি নয়, অল্প সংখ্যক ক্রেতাকে দাঁড়াতে দেবেন বলে ঠিক করেছেন। ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া এবং খুচরো পয়সা ফেরত দেওয়ার জন্য আলাদা এক জনকে নিয়োগও করেছেন।
আগে ১০ থেকে ১২ জন ক্রেতাদের নিয়ে একটা ব্যাচ করে ফুচকা দিতেন। কিন্তু এ বার থেকে নিজের এবং ক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাত্র চার জনের ব্যাচ করেই ফুচকায় টক জল ভরে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। দুই হাতে থাকবে গ্লাভস। খুব সাবধানেই হাত না ডুবিয়ে ফুচকায় টক জল ভরে এগিয়ে দেওয়া হবে ক্রেতাদের। ফুচকার স্টলে থাকবে স্যানিটাইজার।
খাওয়ার আগে প্রত্যেক ক্রেতাকে বাধ্যতামূলক হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। ফুচকার দাম নেওয়া এবং ব্যালেন্স ফেরত দেওয়ার জন্য পীযূষ এক জন সহযোগীও নিয়োগ করেছেন। তাঁকে দৈনিক কয়েক ঘণ্টার জন্য ১৫০ টাকা দেবেন। তাঁর এই সহযোগীই ক্রেতাদের হাতে স্যানিটাইজার দেবেন এবং ফুচকার দাম নেবেন। পাশেই অন্য একটি ছাতার নীচে চেয়ারে বসিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই দই ফুচকা এবং চাটনি ফুচকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন পীযূষ।
বারাসতে পীযূষের ফুচকার কাটতি ভালোই। করোনার আগে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার পিস ফুচকা বিক্রি করতেন। সব খরচ খরচা বাদ দিয়ে আয়টা নেহাত মন্দ ছিল না। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ক্রেতা কম হবে। বিক্রিও আহামরি কিছু যে হবে না, সেটা বিলক্ষণ জানেন পীযূষ। তাই জীবন যুদ্ধে নিজের সংসারকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন থেকেই ফুচকা বিক্রিতেও নতুন নিয়মকে রপ্ত করেই এগিয়ে চলার শপথ নিয়েছেন তিনি।
পীযূষ বলেন, ‘ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এবং ক্রেতাদের সুরক্ষিত করতে এই নতুন নিয়ম রপ্ত করতেই হবে। প্রথম প্রথম একটু সমস্যা হবে। আমারও হয়েছিল তবে একবার রপ্ত হয়ে গেলে সব কিছুই ফের ছন্দে ফিরে যাবে।’