পাকাপাকিভাবে না হলেও অনেকেই কয়েক বছরের জন্য সেনায় যোগ দিতে চান। এতদিন সেই সুযোগ ছিল না। তবে এবার এরকমই একটি প্রস্তাব বিবেচনা করছে সেনা। ‘ট্যুর অফ ডিউটি’ বা টিওডি নামক সেই মডেলে দেশের যুব প্রজন্মকে তিন বছরের জন্য সেনায়(Indian Army) যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। বিষয়টি জানিয়েছেন দুই সেনা আধিকারিক।
এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রস্তাবটি যদি গৃহীত হয়, তাহলে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ট্যুর অফ ডিউটি’ মডেল চালু হবে। অর্থাৎ মিলিটারি ট্রেনিংয়ের পর ইন্টার্নশিপ শুরু হবে। তবে অফিসার-সহ অন্যান্য পদমর্যাদার নির্দিষ্ট কয়েকটি শূন্যপদের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ মিলবে। দ্বিতীয় আধিকারিক বলেন, ‘স্থায়ী বা পার্মানেন্ট সার্ভিসের পরিবর্তে ইন্টার্নশিপ বা সাময়িক মিলিটারির কর্মজীবনের দিকে মোড় নিয়েছে নয়া প্রস্তাব।’
সেনার তরফে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে খরচ বাঁচানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঠিক কতটা খরচ বাঁচবে, তারও একটি হিসেব করা হয়েছে। প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, কমিশনের আগে ট্রেনিং, বেতন বা অ্যালায়েন্স, লিভ একক্যাশমেন্ট-সহ বিভিন্ন খাতে যে শর্ট-সার্ভিস কমিশনড অফিসারের সেনায় চাকরি জীবন ১০ বছর হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রায় ৫ কোটি ১২ লাখ টাকা খরচ হয়। ১৪ বছর যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রায় ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা খরচ বইতে হয়। কিন্তু যাঁদের চাকরির স্থায়িত্ব তিন বছর, তাঁদের ক্ষেত্রে বড়জোর ৮০-৮৫ লাখ খরচ হবে। নয়া টিওডি মডেলের ফলে বেতন এবং পেনশন খাতে অনেকটা ভার লাঘব হবে বলে দাবি করা হয়েছে।
পাশাপাশি পরবর্তীকালে ইন্টার্নশিপ করা প্রার্থীদের কর্পোরেট জগতে ভবিষ্যত উজ্জ্বল হবে বলে প্রস্তাবে জানানো হয়েছে। একটি সমীক্ষা তুলে ধরে জানানো হয়েছে, যাঁরা সেনার প্রশিক্ষণ নিয়ে ২৬-২৭ বছরে চাকরিতে যোগ দিতে চান, তাঁদের নিয়োগ করতে অত্যন্ত আগ্রহী কর্পোরেট সংস্থাগুলি। সদ্য কলেজর ডিগ্রি নিয়ে বেরনো চাকরিপ্রার্থীদের তুলনায় সেনার প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের নিয়োগ করে চায় তারা।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ১০ বছরের চাকরির পর সেনা অফিসাররা ৩৩-৩৪ বছরে চাকরিতে যোগ দেওয়ার থেকে টিওডি অফিসারদের বিষয়টি বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে সংস্থাগুলি। যুবপ্রজন্ম যদি ভবিষ্যতের সরকারি বা কর্পোরেট জগতের মাধ্যম হিসেবে দেখে তাহলে টিওডি সার্ভিসের ধারণা অত্যন্ত আকর্ষণীয় হবে।
তবে এই মডেলের বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকেই সেনায় যোগ দিতে হবে না। সেনার মুখপাত্র কর্নেল আমন আনন্দ জানিয়েছেন, এটি পুরোপুরি স্বেচ্ছায় হবে এবং সেনায় নিয়োগের মানদণ্ডে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘এটা তাঁদের জন্য উপযুক্ত যাঁরা স্থায়ীভাবে প্রতিরক্ষা চাকরিতে থাকতে চান না। কিন্ত সেনার রোমাঞ্চ ও দুঃসাহসিক কাজ এবং ইউনিফর্ম পরার গ্ল্যামারের অভিজ্ঞতা পেতে চান।’